
শাজাহান পাঠান:
নাটোরের বড়াইগ্রামে কলেজছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে ৫ নারীসহ ১০ অপহরণকারীকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে বনপাড়া পৌরশহরের ছাতিয়ানগাছা সড়কের দক্ষিণ খ্রিস্টানপাড়া এলাকা থেকে স্থানীয়রা অপহরণের জন্য ব্যবহৃত মাইক্রোবাসসহ তাদের আটক করে এবং পরে পুলিশে সোপর্দ করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অপহরণকারীরা রাজশাহীর গোদাগাড়ি এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে আসে এবং বনপাড়ার ছাতিয়ানগাছা সড়ক থেকে কলেজছাত্রীকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। তবে ছাত্রীটি কৌশলে জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে চিৎকার করলে স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে এবং অপহরণকারীদের ধরে ফেলে।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী রাধা রাণী কর্মকার (ছদ্ম নাম), বয়স ১৭, জানান, তিনি রাজশাহীর গোদাগাড়ির একটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। পড়াশোনার সময় তার সঙ্গে শফিউল ইসলাম (২৮) নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে সম্পর্কের একপর্যায়ে শফিউল তাকে যৌন হয়রানি করতে থাকলে তিনি বনপাড়ায় বোনের বাড়িতে পালিয়ে আসেন।
মঙ্গলবার বিকেলে তার দুই বান্ধবী দেখা করতে এলে তিনি বুঝতে পারেননি যে তারা শফিউলের নির্দেশেই এসেছে। সরল মনে তাদের আপ্যায়ন শেষে বিদায় দিতে গেলে তিনি মাইক্রোবাস দেখে সন্দেহ করেন এবং আর এগোতে চাননি। এসময় মাইক্রোবাস থেকে শফিউলসহ ৮ জন বেরিয়ে আসে, এতে ভয় পেয়ে পাশের একটি ঘরে আশ্রয় নেন তিনি। অপহরণকারীরা দরজা ভেঙে মুখ চেপে ধরে তাকে কোলে তুলে মাইক্রোবাসে তোলে। তবে কৌশলে জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে চিৎকার করলে স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে।
বড়াইগ্রাম থানার পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবর রহমান জানান, মেয়েটি হিন্দু সম্প্রদায়ের এবং ছেলেটি মুসলিম ও বিবাহিত হওয়ায় তাদের প্রেমের সম্পর্ক টেকেনি। প্রাইভেট পড়ানোর সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় শফিউল অপহরণের চেষ্টা চালায়। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত মাইক্রোবাসসহ ১০ জনকে আটক করেছে, যাদের সবাই রাজশাহীর গোদাগাড়ি এলাকার বাসিন্দা। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।