
সৈয়দ জাহিদুজ্জামান:
দিঘলিয়া উপজেলার হাট-বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। কিছু কিছু দোকানে পাওয়া গেলেও বোতালের গায়ে লেখা দামের চেয়ে অধিক দামে বিক্রি করা হচ্ছে। যা নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়াচ্ছেন দোকানিরা। গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলা সদরসহ অধিকাংশ মুদি দোকান থেকে বোতলজাত এ ভোজ্যতেলটি যেন বাজার থেকে হাওয়া হয়ে গেছে।
অন্যদিকে অধিক মুনাফালোভী দোকানিরা বোতলজাত সয়াবিন তেলের বোতল কেটে রাতের আঁধারে ড্রামে ঢেলে খোলা সয়াবিন হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে অধিক দামে। এমন অভিযোগ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। এজন্য ভোক্তারা দায়ী করছেন বাজার মনিটরি না থাকাকে। গত কয়েকদিন থেকে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, হঠাৎ করে খোলা সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে ১৬৫ টাকা লিটার বিক্রি করা হলেও ২০ টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়ে এখন তা ১৯০ টাকা থেকে ২০০ টাকা লিটার বিক্রি করা হচ্ছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি না পাওয়ায় দোকানিরা বোতলের মুখ কেটে ড্রামে ঢেলে তা খোলা সয়াবিন হিসেবে অধিক দামে বিক্রি করছেন। তবে কিছু কিছু দোকানে বোতলজাত সয়াবিন পাওয়া গেলেও বোতলের গায়ে লেখা দামের চেয়ে অধিক দাম আদায় করা হচ্ছে ক্রেতাদের কাছ থেকে। এ নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে দোকানিদের ঝামেলা হচ্ছে। এতে বাজার থেকে হাওয়া হয়ে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে পারছেন না।
শুক্রবার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি বাজারে বাজার করতে আসা মনিরুল ইসলাম বলেন, কয়েকটি দোকানে গিয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাইনি। আমি সব সময় বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনে থাকি। কিন্তু বোতলজাত সয়াবিন না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে আমি খোলা সয়াবিন তেল কিনেছি। তাও আবার দাম বেশি। এক লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এখন দেখছি বোতলজাত সয়াবিন তেলের চেয়ে খোলা সয়াবিন তেলের দাম আরও বেশি।
পথের বাজারে বাজার করতে আসা রুবেল বলেন, সব সময় খোলা সয়াবিনের দাম কম থাকায় সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ প্রয়োজনের তেল কিনতে পারতেন। এখন দেখছি খোলা সয়াবিনের দামই আকাশ ছোঁয়া। বোতলজাত সয়াবিন পাওয়ায় যাচ্ছে না। বাজারে এমন পরিস্থিতির জন্য মনিটরিং না থাকার কারণে দোকানিরা তাদের মনমত বিক্রি করছেন সয়াবিন। বোতলজাত সয়াবিনের দাম কম হওয়ায় এক শ্রেণির অসাধু দোকানিরা রাতের আঁধারে বোতলের মুখ কেটে তা ড্রামে ভরে খোলা সয়াবিন হিসেবে বিক্রি করছেন খুব সহজেই বলে দাবি করেন রুবেল।
সেনহাটি বাজারের মুদি দোকানি রাম এ প্রতিবেদককে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে কোম্পানির ডিলাররা তেল দিচ্ছে না। আজ দেয় কাল দেয় এভাবে টাল বাহনা করছে। তাই বাজারের অনেকে খোলা সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।
বারাকপুর বাজারের মুদি ব্যবসায়ী গাজী জিয়াউর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, খোলা সয়াবিনের দাম বৃদ্ধির কারণে কোম্পানির লোকজন বোতলজাত সয়াবিন দিচ্ছে না। ফলে খোলা সয়াবিন ১৮০ টাকা লিটার বিক্রি করছি। অধিক দাম নেওয়ার সুযোগ নেই। ডিলার তেল সরবরাহ নিয়ে টাল বাহনা করছে। মাহে রমজান আগত। এ ব্যাপারে মনিটরিং জোরদার করা দরকার।
বিষয়টি সম্পর্কে দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হবে। কেন বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ও ডিলারদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।