
নিজস্ব প্রতিনিধি:
গাজীপুর সদর উপজেলার রুদ্রপুর পূর্বপাড়া এলাকার গভীর গজারি বনের ভেতর থেকে রাসেল বেপারী (১২) নামে এক কিশোর চালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় গাজীপুর জেলা পুলিশ একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটন করেছে। পুলিশ দুটি চোর চক্রের সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে এবং চুরি হওয়া অটোরিকশার বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করেছে।
নিহত রাসেল বেপারী রুদ্রপুর মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং স্থানীয় মৃত কাদির বেপারীর ছেলে। জীবিকার তাগিদে সে হোতাপাড়া-আরপি গেট সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাত। তবে গত শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর সে আর ফিরে আসেনি। পরদিন শনিবার সকালে স্থানীয়রা তার মরদেহ বনের মধ্যে দেখতে পায়। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং তদন্ত শুরু করে।
জয়দেবপুর থানা পুলিশ দীর্ঘ তদন্তের পর এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্রের হাত থাকার প্রমাণ পায়। পুলিশের অভিযান চালিয়ে খোকন নামে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তির বাড়ি থেকে রাসেলের চুরি হওয়া অটোরিকশার কন্ট্রোলার, মোটর ও ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়। আরও তদন্তে, সবুজ মিয়া নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে পাওয়া যায় সবুজ-কালো রঙের তিন চাকার অটোরিকশার মূল বডি। পরে রাসেলের পরিবারের সদস্যরা ওই অটোরিকশার বডি দেখে নিশ্চিত হন যে, এটি রাসেলের চুরি হওয়া অটোরিকশা।
এ ব্যাপারে জয়দেবপুর থানার ওসি আব্দুল হালিম বলেন, “এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড মনে হচ্ছে। গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি সাব্বির হোসেন সুজন ও সবুজ মিয়া তদন্তকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছে। তবে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ রয়েছে এবং তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
পুলিশের ধারণা, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও একটি চক্র কাজ করছে এবং মূল রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃতদের জামিন না দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, রাসেলের মতো অনেক কিশোর জীবিকার তাগিদে অটোরিকশা চালিয়ে থাকে, কিন্তু এই ধরনের সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্যরা তাদের টার্গেট করছে। এই হত্যাকাণ্ডের কারণে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, যদি পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তবে এমন আরও ঘটনার ঘটনা ঘটতে পারে।
এদিকে, পুলিশ আরও তথ্য সংগ্রহ করার জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং এই ঘটনার পেছনে যারা জড়িত তাদের দ্রুত ধরতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।