
নিজস্ব প্রতিনিধি:
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের বিচারে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেন না। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, যদি কেউ এই বিচারে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে জাতীয় নাগরিক কমিটি অথবা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঐক্যবদ্ধভাবে ওই ব্যক্তি অথবা প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক থেকে বের হয়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমির সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, “আমাদের দেশে একটা সমস্যা হচ্ছে, নেতারা খুনি হাসিনার মতো খুব সহজে সেইফ এক্সিট পেয়ে যায়। এই গণঅভ্যুত্থানে যারা আন্দোলনে ছিল তাদের কিন্তু এই খুনি হাসিনা ও তার দোসররা ছাড়বে না। সে জায়গায় আমরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কোনো ধরনের নেগোসিয়েশনের চিহ্ন দেখতে চাই না। যারা খুনি, যারা খুনিদের দোসর, তারা যেই মত ও দলেরই হউক না কেন, তাদের শাস্তি হতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিচারে আমরা কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করি না। আমরা এটা স্পষ্ট করে দিয়েছি। যদি হস্তক্ষেপ করা হয়, তাহলে জাতীয় নাগরিক কমিটি অথবা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করবে। কারণ আমাদের সবচেয়ে বড়, প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে ওই খুনিদের বিচার করা।”
সারজিস আলম আরও বলেন, “আমরা আমাদের জায়গা থেকে কিছু জিনিস খুব স্পষ্ট জানিয়েছি এবং এটা পুরো বাংলাদেশের জন্যই। ছাত্রদের নেতৃত্বে যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান হয়েছে, তরুণ প্রজন্ম তাদের জায়গা থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দায়িত্ব সম্পন্ন করেছে। এখন আমাদের রাজনৈতিক দলের যারা অগ্রজ রয়েছেন, তাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো, সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সেই আওয়ামী লীগ, যেটি ৫ আগস্ট থেকে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখানো। সেই আওয়ামী লীগ যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও গণহত্যা করেছে, তাদেরকে নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ায় যেতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এ ক্ষেত্রে যদি তারা তাদের নেতৃত্ব দিতে না পারে, তবে তরুণ প্রজন্মের কাছে তাদেরকে যুগের পর যুগ এই দায়বদ্ধতা বহন করতে হবে।”
সারজিস আলম বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি, পুরো বাংলাদেশে অপারেশন ডেভিল হান্ট চলছে। যারা শহীদ হয়েছেন এবং আহতরা রয়েছেন, তাদের মামলার সাপেক্ষে গ্রেফতার হচ্ছে, এবং বিভিন্ন বিচারিক প্রক্রিয়া চলছে। তবে, যারা ফ্যাসিবাদ আন্দোলনে ছিল এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে পোস্টেড ছিল, তারা পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে রেফারেন্স করছে। এই রেফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকরা যদি সন্ত্রাসীদের জামিন দেন অথবা আশ্রয় দেন, তবে এটি বিচারিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং এই মানুষগুলো দ্রুত পুনর্বাসিত হয়ে, যারা ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলন করেছে তাদের উপর হামলা করতে পারে।”
তিনি অবশেষে বলেন, “আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, যে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ হলে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করবে এবং এই অন্যায় বিচারব্যবস্থা ও রাজনৈতিক দুর্নীতি প্রতিহত করবে।”