
বিশেষ প্রতিনিধি:
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে খুব বেশি সময় নেই। আমরা ইতোমধ্যে সাত মাস পার করে ফেলেছি এবং ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।’’ গত সোমবার পুলিশ প্রশাসনের ১২৭ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
এছাড়া, নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা সমস্যা ও চাপের সৃষ্টি হতে পারে জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘‘বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ নিজের কেন্দ্রের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। তবে আমাদের আইনকে সম্মান রেখে শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে, যাতে নির্বাচিত সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারে। যে সরকার আইন ভঙ্গ করে, সে কখনো আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না।’’
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে এটি পরিষ্কার যে, অন্তর্বর্তী সরকার ‘‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’’ নিয়ে এগোচ্ছে। গত ১৪ মার্চ তিনি জাতিসংঘের মহাসচিবকে জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরে অথবা আগামী বছরের জুনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে, যা রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতির ওপর নির্ভর করবে।
এমনকি, ৩ মার্চ বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস স্পষ্টভাবে বলেন, ‘‘আমরা ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে ঘোষণা করেছি, এ বিষয়ে নতুন কিছু বলার নেই।’’
এর আগে, ৮ ফেব্রুয়ারি, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছিলেন, ‘‘এপ্রিল অথবা মার্চের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, তবে বর্ষা মৌসুমের কারণে নির্বাচন কিছুটা পিছিয়ে মার্চে অনুষ্ঠিত হতে পারে।’’
অন্যদিকে, পুলিশ প্রশাসনকে তিনি আইন ও শৃঙ্খলার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেন। ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, ‘‘সরকার যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে, তা পুলিশের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন হয়। আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘নতুন বাংলাদেশ গড়তে পুলিশকে অবহেলা করা যাবে না। পুলিশ বাহিনীকে সম্মুখে রেখে জনগণের আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে জনগণ নিরাপদে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার উপভোগ করতে পারে।’’
ড. ইউনূস পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘‘অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে, পুলিশ বাহিনী নতুনভাবে দেশের সেবা করবে এবং জনগণের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।’’
সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ ও রাজশাহী পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।