
মাহামুদ আহসান হাবিব:
সৈরাচার সরকার পতনের এতগুলো দিন হয়ে গেলো। আপনি পারেননি চালের দাম কমাতে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে। লক্ষ লক্ষ মানুষ বেকার হয়ে পড়ে আছে, যাদের কর্মসংস্থানও আপনি করতে পারেননি। উপরন্তু অবনতি হয়েছে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। এ ৬ মাসে ইউনুস সরকারের খাতায় লবডঙ্কা ছাড়া আর কিছুই নেই, তাহলে রেখে কী লাভ?—বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সাধারণ পাঠাগার মাঠে ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে এবং পতিত ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা’ শীর্ষক জেলা বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্র সমন্বয়কদের সমালোচনা করে দুদু বলেন, “আপনারা ছাত্ররাই যে একমাত্র গণঅভ্যুত্থান করেছেন, তা কিন্তু নয়। ৯০-এ আমরাও গণঅভ্যুত্থান করেছি। সক্রিয় রাজনীতি করার পরও এমপি-মন্ত্রী হয়েও আমরা এখনও যে গাড়িতে চড়তে পারিনি, আপনারা তা করছেন! আপনারা ছাত্র সমন্বয়করা কোনো চাকরি করেন না, ব্যবসা করেন না, তাহলে দুদিনেই রাজনীতিতে এসে দামি গাড়ি আর রূপায়ন টাওয়ারের ফ্ল্যাট কেনার টাকা কোথা থেকে আসছে?”
তিনি বলেন, “ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শিক্ষার্থীদের একটা দল থাকা দরকার। তার মানে আপনি শিক্ষার্থীদের পক্ষে এবং আপনি নিরপেক্ষ নন। আপনি শিক্ষার্থীদের হয়ে দুই নম্বরি কারবার করলেও করতে পারেন। আপনার পদত্যাগ কিন্তু বিএনপি এখনো দাবি করেনি। দুই নম্বরি করা কিন্তু একজন নোবেল বিজয়ীর কাজ না। এতে আপনার ও আপনার সরকারের সুনাম নষ্ট হয়ে যাবে।”
জামায়াতসহ অন্যান্য দলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে বিএনপির জনপ্রিয়তা অনেক। নির্বাচনে বিএনপিই ক্ষমতায় আসবে, এটা দেখে তাদের সহ্য হচ্ছে না। তবে আপনাদের জন্য বিএনপির দরজা সব সময়ের জন্য খোলা আছে।”
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “শেখ পরিবারের উদ্দেশ্যে ১৭ বছর ধরে বলছি, আর বলতে ইচ্ছা করে না। হাসিনার বাপ চোর, ভাই চোর, ছেলে-মেয়ে সকলেই চোর। দেশের সম্পদ আর এমন কোনো ব্যাংক নেই, যে ব্যাংক থেকে এ পরিবার চুরি করেনি। নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত তদন্ত চলবে এবং তাদের বিচার হবে।”
সমাবেশে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মির্জা ফয়সল আমিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক ও আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সহ-সভাপতি নূর করিম, জেলা মহিলা দলের সভাপতি ফোরাতুন নাহার প্যারিসসহ জেলা বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান।