
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী গতকাল শনিবার গাজা থেকে আরও ছয় জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীটি মোট ২৫১ ইসরায়েলিকে জিম্মি করেছিল।
জিম্মি বিনিময়ের অগ্রগতি
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭ অক্টোবরের ঘটনার পর বিভিন্ন চুক্তি ও বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত ১৩৮ জন জিম্মি জীবিত মুক্তি পেয়েছেন, ৪ জনকে মৃত অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি বাহিনী ৪০ জিম্মির লাশ উদ্ধার করেছে এবং জীবিত অবস্থায় ৮ জিম্মিকে উদ্ধার করেছে।
বর্তমানে হামাসের হাতে এখনো ৬১ জন জিম্মি রয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল, যাদের মধ্যে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে পাঁচজন ইসরায়েলের নাগরিক নন। তারা থাইল্যান্ড (৩ জন), নেপাল (১ জন) এবং তাঞ্জানিয়ার (১ জন) নাগরিক। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে একজন থাই নাগরিক এবং নেপালের নাগরিক এখনো জীবিত।
বন্দি মুক্তি স্থগিতের ঘোষণা
যুদ্ধবিরতির চুক্তির অংশ হিসেবে শনিবার মুক্তিপ্রাপ্ত ছয় জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ৬২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। তবে সর্বশেষ জিম্মি বিনিময়ের সময় হামাস ‘অপমানজনক অনুষ্ঠান’ আয়োজন করেছে বলে অভিযোগ তুলে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
শনিবার দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন,
“অপমানজনক আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করা হয়েছে এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের সঙ্গে নিন্দনীয় ব্যবহার করা হয়েছে। হামাস বারবার যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। তাই গতকাল যেসব ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল, তা স্থগিত করা হলো।”
তিনি আরও বলেন, পরবর্তী ধাপে হামাসের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং ‘অপমানজনক অনুষ্ঠান’ ছাড়া বাকি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।
চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা
ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি স্থগিত করায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে হামাস কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সংঘাত নিরসনের জন্য আন্তর্জাতিক মহল থেকে দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের ফলে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।