
নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরের গুরুদাসপুরের মেয়ে সাংবাদিক মাসুমা ইসলাম (৩০) চার দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আজকে মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি ‘এখন টেলিভিশনের’ রাজশাহী ব্যুরোর রিপোর্টারের দায়িত্বে ছিলেন।
নিহত সাংবাদিক মাসুমা ইসলাম গুরুদাসপুর পৌর এলাকায় নারায়ণপুর মহল্লার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুর জব্বারের মেয়ে। মাসুমা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত ছিলেন। গত বছর তিনি বেসরকারি টেলিভিশন ‘এখন’-এর রাজশাহী ব্যুরোর রিপোর্টারের দায়িত্ব নেন। সংসার জীবনে মাসুমার ১২ বছর বয়সি একটি মেয়ে রয়েছে।
পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাসুমা স্বামীর সঙ্গে ১৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় তার আত্মিয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নূরজাহান হোটেলের সামনে দুর্ঘটনাকবলিত হন। সেখানে দাঁড়িয়ে তারা সিএনজির চালকের সঙ্গে কথা বলার সময় যাত্রীবাহী একটি দ্রুতগামী বাস তাদের ধাক্কা দেয়। এতে সাংবাদিক মাসুমা ইসলাম, তার স্বামী সৈকত ইসলাম ও সিএনজি চালক গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাসুমা ও তার স্বামীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঢাকা মেডিকেলে অবস্থার অবনতি হলে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই অজ্ঞান অবস্থায় চারদিন ধরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আজকে মৃত্যুর কাছে হেরে গিয়ে চিরঘুমে চলে যান সাংবাদিক মাসুমা। তার স্বামী সৈকত ইসলাম বর্তমানে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রে আরও জানা যায়, সাংবাদিক মাসুমার মরদেহ প্রথমে রাজধানীর বাবর রোডের মারকাজুল ইসলামে নেওয়া হবে। সেখানে প্রথম জানাজা শেষে নাটোরের গুরুদাসপুরে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নারায়ণপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
নিহত সাংবাদিক মাসুমার পিতা আব্দুল জব্বার বলেন, দুই সন্তানের মধ্যে মাসুমা দ্বিতীয়। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে তারা নিরব নির্বিকার। মাসুমার সন্তানও মাকে হারিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।