
বিশেষ প্রতিনিধি:
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সময় দুপুরে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে দেশব্যাপী ঘটে যাওয়া গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নৃশংসতার বিষয়ে তৎকালীন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ভূমিকা নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন হবে এটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর তথ্যে জানা যায়, জাতিসংঘ তাদের খসড়া প্রতিবেদন গত মাসের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশ সরকারের কাছে পাঠিয়েছিল মতামত জানানো জন্য। সরকার গত সপ্তাহে তাদের মতামত প্রদান করেছে।
এখন, ১৩ ফেব্রুয়ারি জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতিসংঘ প্রতিবেদনটি জনসমক্ষে প্রকাশ করবে। জানা গেছে, এই প্রতিবেদনটি প্রায় দেড়’শ পৃষ্ঠা দীর্ঘ এবং এতে ঘটনার বিশ্লেষণ, কারণসমূহ এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কিছু সুপারিশও থাকবে।
একটি সূত্র জানায়, গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বের নির্দেশে হত্যাকাণ্ড এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটেছে বলে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন প্রমাণ পেয়েছে। মিশনটি আরও তদন্তের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে সুপারিশ করেছে। তবে এসব সুপারিশ বাধ্যতামূলক নয়। তবে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের তথ্য-উপাত্ত আদালতে যুক্তি হিসেবে উপস্থাপন করার একটি উদাহরণ রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তে জাতিসংঘ ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন গঠন করলেও বাংলাদেশে এটি প্রথমবারের মতো। গত বছরের জুলাই-আগস্টে কোটাবিরোধী আন্দোলনে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং হত্যাযজ্ঞের অভিযোগ ওঠার পরই জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করে।
প্রবল আন্দোলনের ফলে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়। এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ককে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে তদন্তের আহ্বান জানান।
আগস্ট মাসেই একটি প্রাক-তদন্ত দল ঢাকা আসে এবং সেপ্টেম্বরে মূল তদন্ত শুরু হয়। ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করেছে।